Jump to content
IslamicTeachings.org

মুসলমানরা কি অমুসলিমদের ঘৃণা করে ?


MUSLIM WOMAN

Recommended Posts

Asalamu'alaikum

Do Muslims Hate non-Muslims?

 

 

প্রশ্ন : মুসলমানরা কি অমুসলিমদের ঘৃণা করে ?

 

 

মুসলমানরা অন্য ধর্মের সবাইকে ঘৃণা করে – এটা ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে একটি অপপ্রচার । নির্দিষ্ট কোন জাতি , ধর্ম , বর্ণ , ভাষা বা দেশের মানুষকে ঘৃণা করার অধিকার মুসলমানদের নেই । ইসলাম বর্ণ বৈষম্য বা জাতিগত হিংসা সমর্থন করে না । তবে মুসলমানরা কুফর বা এক আল্লাহতে অবিশ্বাসকে ঘৃণা করে ।

 

আমরা সব মানুষকে ভালবাসি , সম্মান করি তবে অপছন্দ করি স্রষ্টায় তাদের অবিশ্বাসকে ও স্রষ্টার পাশাপাশি অন্য উপাস্য গ্রহণকে । একজন ডাক্তার রোগীকে ঘৃণা করেন না , তবে রোগকে তিনি অপছন্দ করেন ও চান যে চিকিৎসা করে অসুস্থ মানুষকে সেই রোগ থেকে মুক্তি দিতে । তেমনি মুসলমানরা আল্লাহর অবাধ্যতাকে ঘৃণা করেন ও তাদের চেষ্টা হলো মানুষকে এই অসুস্থতা থেকে মুক্তি দিয়ে আল্লাহর অনুগত বান্দায় পরিণত করা ।

 

অমুসলিমদের সাথে সদয় আচরণ করতে কুরআনে কোন নিষেধ নেই । আল্লাহ বলেন : ধর্মের ব্যপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে নি ও তোমাদেরকে দেশ থেকে বার করে দেয় নি , তাদের প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শন ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদের মানা করে না ( সুরা মুমতাহিনা : আয়াত ৮ ) ।

 

কুরআনে বলা হয়েছে : কোন সম্প্রদায়ের শত্রুতা যেন তোমাদের কখনো প্ররোচিত না করে ন্যায়বিচার বর্জন করতে । ন্যায়বিচার করবে । ন্যায়বিচার করাই তাকওয়ার নিকটতম ( সুরা মায়িদা ; আয়াত ৮ )

 

অমুসলিমদের সাথে ভাল ব্যবহারের আদর্শ স্থাপন করে গিয়েছেন আল্লাহর সর্বশেষ নবী ও রাসূল হজরত মুহাম্মদ صلى الله عليه وسلم যখন মক্কা বিজয় করেন , তখন তার সাথে ছিল দশ হাজার সশস্ত্র অনুগত সাহাবী । এই সেই মক্কাবাসী যারা তাকে পরিবারসহ অনাহারে রেখেছিল দিনের পর দিন , যারা হত্যা করেছে তার প্রাণপ্রিয় কন্যা , চাচাসহ অনেক প্রিয়জনকে । এই মূর্তি পূজারী , স্বজন হত্যাকারী , নির্মম অত্যাচার করে প্রিয় জন্মভূমি মক্কা থেকে রাসূল صلى الله عليه وسلم কে বিতাড়নকারীদের সাথে নবী صلى الله عليه وسلم এর আচরণ কেমন ছিল ?

 

ঘৃণাই যদি ইসলামের শিক্ষা হতো , তাহলে রাসূল صلى الله عليه وسلم এই অপরাধীদের সবাইকে মেরে ফেলতেন । কিন্ত্ত তিনি ক্ষমার আদর্শ স্থাপন করলেন । হাতেগোণা ১০/১২ জন যুদ্ধ অপরাধীকে শাস্তি দিয়ে পুরো মক্কাবাসীকে মাফ করা হলো ; যুদ্ধ বিজয়ী সেনাদের হাতে বিধর্মী একজন নারীরও সম্মান নষ্ট হলো না ।

 

পাশ্চাত্য গণমাধ্যম কখনো হজরত মুহাম্মদ صلى الله عليه وسلم এর এসব আদর্শ ও মহত্বের ঘটনা প্রচার করে না । পশ্চিমারা শুধু ( তাদের মতে ) ক্রশবিদ্ধ

অবস্থায় যীশু খ্রীস্ট অত্যাচারীদের মাফ করেছিলেন , সেটাই প্রচার করে । কিন্ত্ত তারা এটা বলে না সত্যি যদি এই ঘটনা ঘটেও থাকে অর্থাৎ ক্রুশবিদ্ধ হওয়াটা , তাহলে সেসময় যীশুর পক্ষে প্রতিশোধ নেয়ার কোন শক্তি ছিল না । অথচ রাসূল صلى الله عليه وسلم যখন অপরাধীদের ক্ষমা করলেন , তখন তিনি ছিলেন প্রতিশোধ নেয়ার মত ক্ষমতাবান । ইসলাম যে ক্ষমা ও মহত্বের ধর্ম , এর থেকে বড় প্রমাণ আর কী হতে পারে ?

 

 

সব মানুষ আল্লাহর সৃষ্টি । আল্লাহ বলেন : হে মানুষ ; আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী থেকে , পরে তোমাদেরকে ভাগ করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে যাতে তোমরা একে অন্যের সাথে পরিচিত হতে পারো ( সুরা হুজুরাত : ৪৯ :১৩ ) । মুসলমানদেরকে আল্লাহ নির্দেশ দেন সদয় ব্যবহারের : ...আর ভাল ব্যবহার করো পিতা – মাতার সাথে , আত্মীয়দের সাথে , ইয়াতীমের সাথে , মিসকিনদের সাথে , নিকট – প্রতিবেশী ও দূর দূর প্রতিবেশীদের সাথে , সঙ্গী-সাথী ও পথচারীদের সাথে ও তোমাদের অধিকারে থাকা দাস-দাসীদের সাথে । নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না দাম্ভিক , অহংকারী ব্যক্তিকে ( সুরা নিসা : আয়াত ৩৬ ) ।

 

 

 

 

আয়াতটি ভাল করে পড়ে দেখুন - এমন কী যে পথচারী অর্থাৎ যাকে আমি চিনিও না , তার সাথেও খারাপ ব্যবহার করার অনুমতি আল্লাহ আমাকে দেন নি । তাই অমুসলিম প্রতিবেশীর সাথে খারাপ ব্যবহার করা , তার প্রার্থনার ঘরে গিয়ে উপাসনার মূর্তি ভাঙ্গা বা তার উপাস্যের গয়না চুরি করা কোন মুসলমানের কাজ নয় ।

 

 

মুসলমান পুরুষদের আল্লাহ অনুমতি দিয়েছেন ইয়াহুদী ও খ্রিস্টান নারীদের বিয়ে করতে যদি তারা সৎ চরিত্রের হয় : তোমাদের আগে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের সচ্চরিত্রা নারী তোমাদের জন্য বৈধ করা হলো যদি তোমরা তাদের দেনমোহর দাও বিয়ের জন্য , প্রকাশ্য ব্যভিচার বা গোপন প্রেমিকা গ্রহণের জন্য নয় ( সুরা মায়িদা ; আয়াত ৫ ) । আসমানী কিতাবের মানুষদের জবাই করা মাংস মুসলমানদের জন্য হালাল । ইসলামের শিক্ষা যদি অন্য ধর্মের সবাইকে ঘৃণা করাই হতো , তবে নিশ্চয়ই এসব বিষয়ের অনুমতি আল্লাহ দিতেন না ।

 

তাই মুসলমানরা অন্য ধর্মের সবাইকে ঘৃণা করে , আসুন এই অপপ্রচারে কেউ যেন আর বিভ্রান্ত না হয় , সেজন্য আমরা বেশী বেশী করে ইসলামের বাণী সবার মাঝে প্রচার করি । আল্লাহ আমাদেরকে সেই তওফীক দান করুন ।

 

তথ্যসূত্র : http://www.islamonline

 

Link to comment
Share on other sites

Create an account or sign in to comment

You need to be a member in order to leave a comment

Create an account

Sign up for a new account in our community. It's easy!

Register a new account

Sign in

Already have an account? Sign in here.

Sign In Now
×
×
  • Create New...