Jump to content
IslamicTeachings.org

হজরত মুহাম্মদ صلى الله عليه وسلم স্ত্রীদের তালাক দিতে


MUSLIM WOMAN

Recommended Posts

Asalamu'alaikum

 

 

হজরত মুহাম্মদ صلى الله عليه وسلم স্ত্রীদের তালাক দিতে কি সাহাবীদের আদেশ দিতেন ?

 

 

 

( পশ্চিমা গণমাধ্যম ২৪/৩৬৫ অর্থাৎ সারাবছর জুড়ে সবসময়ই ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচারে লিপ্ত । এসব অপপ্রচারে শুধু যে অমুসলমানরাই ইসলাম ও হজরত صلى الله عليه وسلم এর সম্পর্কে ভুল ধারণা রাখে তাই না , দু:খের বিষয় হলো অনেক মুসলমানও ইসলামের নানা বিষয় নিয়ে লজ্জিত থাকে । এর একটি হলো ইসলামে কেন পুরুষদের বহু বিবাহ স্বীকৃত বা কেন হজরত صلى الله عليه وسلم এর একাধিক স্ত্রী ছিল ?

 

এসব ভুল ধারণা দূর করতে ফতোয়া ও অন্যান্য প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নীচের লেখাটি লিখলাম । কোন ভুল চোখে পড়লে জানাবেন ) ।

 

 

 

প্রশ্ন : কেন হজরত মুহাম্মদ صلى الله عليه وسلم এর ১১ জন স্ত্রী ছিল ? আমার বন্ধু বলে রাসূল صلى الله عليه وسلم ছিলেন নারীলোভী ও সাহাবীদের তিনি বলতেন স্ত্রীদের তালাক দিতে যাতে তিনি নিজে তাদেরকে বিয়ে করতে পারেন যেমন যায়েদকে বলেছিলেন । এটা কি সত্য ?

 

উত্তর : সব প্রশংসা আল্লাহর যিনি জগতসমূহের রব । আল্লাহর শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক আমাদের নবী মুহাম্মদ صلى الله عليه وسلم এবং তাঁর পরিবার ও সাহাবীদের উপর ।

 

 

প্রিয় ভাই , আপনার বন্ধু যা বলেছে তা আর কিছুই না বরং পুরোটাই মিথ্যা ও জঘন্য অপবাদ । খুব সম্ভবত সে রাসূল صلى الله عليه وسلم এর সাথে যায়নাব বিনতে জাহাশের বিয়ে নিয়ে কথা বলেছে । প্রকৃতপক্ষে সন্তান দত্তক নেয়ার যে বহুল প্রচলিত রীতি সমাজে ছিল , তার বৈধতা বাতিল হয় এই বিয়ের মাধ্যমে । পালক সন্তানকে নিজের গর্ভজাত সন্তানের মত মনে করা হতো ও পালক অভিভাবকের বংশ – পরিচয়ে দত্তক সন্তান পরিচিত হতো ।

 

পবিত্র কুরআনে বলা হলো : তোমরা সন্তানকে পিতার পরিচয়ে ডাকো ( সুরা আহযাব ; আয়াত ৫ ) । যায়েদের সাথে রাসূল صلى الله عليه وسلم এর কোন রক্ত সম্পর্ক ছিল না ।

 

 

 

যায়নাব ছিলেন যায়েদ ইবনে হারিথার স্ত্রী । যায়েদ পরিচিত ছিলেন যায়েদ ইবনে মুহাম্মদ বলে কেননা রাসূল صلى الله عليه وسلم তাকে দত্তক নিয়েছিলেন । যায়েদ মাঝেমাঝেই রাসূল صلى الله عليه وسلم এর কাছে আসতো স্ত্রীর নামে অভিযোগ করতে । স্ত্রীর সাথে তার সম্পর্ক একদমই ভাল ছিল না ।

 

 

 

আল্লাহ এরমধ্যে রাসূল صلى الله عليه وسلم কে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে যায়েদ স্ত্রীকে তালাক দেবে ও যায়নাবের সাথে রাসূল صلى الله عليه وسلم এর বিয়ে হবে । তবু রাসূল صلى الله عليه وسلم যায়েদকে বোঝানোর চেষ্টা করতেন এই বলে যে : আল্লাহকে ভয় করো ও স্ত্রীকে নিজের কাছে রাখো ।

 

 

কিন্ত্ত যায়েদ স্ত্রীকে তালাক দেয় । এরপর যায়নাবের ইদ্দত সময় পার হওয়ার পর কুরআনের আয়াত নাজিলের প্রেক্ষিতে রাসূল صلى الله عليه وسلم এর সাথে যায়নাবের বিয়ে হয় । এ নিয়ে বিভ্রান্তি বা অপপ্রচারের কোন সুযোগ নেই । মহান আল্লাহ কুরআনে বলেন : তারপর যায়েদ যখন যায়নাবের সাথে বিয়ের সম্পর্ক ছিন্ন করলো , তখন আমি তাকে তোমার সাথে বিয়ে দিলাম যাতে বিশ্বাসীদের মনে কোন সংশয় না থাকে যে পালক ছেলের তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীদের সাথে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়াতে কোন দোষ নেই ( সুরা আহযাব : আয়াত ৩৮) ।

 

 

এই তালাক ও বিয়ের ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে দত্তক সন্তান গ্রহণের যে নিয়ম সমাজে চালু ছিল অর্থাৎ পালক ছেলেকে নিজের ছেলে হিসাবে পরিচয় দেয়া , তা বাতিল হয়।

 

অনেকেই ইচ্ছা করেই অনেক বিষয় এড়িয়ে যায় যেমন , যায়নাব ছিলেন রাসূল صلى الله عليه وسلم এর আপন চাচাতো বোন । ছোট থাকতেই যাকে তিনি বড় হতে দেখেছেন , তাকে যদি রাসূল صلى الله عليه وسلم আগে থেকেই ভালবাসতেন , তাহলে যায়েদের সাথে যায়নাবের বিয়ের ঘটকালি কেন তিনি করেছিলেন ? চাইলে যায়েদের সাথে বিয়ে ও তালাকের আগেই তো তিনি যায়নাবকে বিয়ে করতে পারতেন । তাছাড়া একজন সাবেক ক্রীতদাসের তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী হিসাবে যায়নাবের জন্য উপযুক্ত স্বামী পাওয়া কঠিন হতো । এছাড়াও যে কোন বিশ্বাসী নারীর জন্য আল্লাহর রাসূল صلى الله عليه وسلم এর চেয়ে সেরা স্বামী আর কে হতে পারে ?

 

 

পাশ্চাত্যের গণমাধ্যমের ইসলাম বিরোধী প্রচারের কারণে দু:খজনকভাবে অনেক মুসলমানও এই বিয়ে ও অন্য অনেক অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হন ।

 

সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া ?

 

 

রাসূল صلى الله عليه وسلم যেন ধর্মপ্রচার না করেন , সেজন্য মক্কার কাফিররা তাঁর চাচার মাধ্যমে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল যে রাসূল صلى الله عليه وسلم যদি সম্পদ চান , যদি আরবের সবচেয়ে সুন্দরী নারীদেরকে চান তবে তাঁর চাহিদামত ধনসম্পদ ও সুন্দরী নারী উপহার হিসাবে দেয়া হবে ; শুধু তাই নয় , তাকে নিজেদের নেতাও বানানো হবে ।

 

 

 

রাসূল صلى الله عليه وسلم যদি অর্থ ও নারীলোভী হতেন , তবে কি তিনি এতসব লোভনীয় প্রস্তাব ফিরিয়ে দিতেন ? তিনি এসব ঘুষ প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন , চাচা , কাফিররা যদি আমার ডান হাতে সূর্য আর বাম হাতে চাঁদকেও এনে দেয় , তাহলেও আমি ইসলাম প্রচারে বিরত হবো না যতক্ষণ না বিজয় অথবা আমার মৃত্যু হয় ।

 

 

 

নারীলোভী হলে রাসূল صلى الله عليه وسلم বিধবা , তালাকপ্রাপ্তা , সন্তানসহ বয়স্কা নারীদের বিয়ে করবেন কেন যখন তাঁর সুযোগ ছিল সুন্দরী , কুমারী নারীদের বিয়ে করার ?

 

 

মারিয়া ( ইনি স্ত্রী ছিলেন কি না সেটা নিয়ে বিতর্ক আছে ) ও আয়শা ছাড়া রাসূল صلى الله عليه وسلم এর অন্য সব স্ত্রী ছিলেন তালাকপ্রাপ্তা অথবা বিধবা । যে কোন সমাজেই বিধবা ও তালাকপ্রাপ্তা নারীদের পক্ষে একাকী জীবন কাটানো , সন্তান থাকলে তাকে মানুষ করা - এসব কষ্টসাধ্য কাজ । আগেকার আরব সমাজও এর ব্যতিক্রম ছিল না । রাসূল صلى الله عليه وسلم এসব বিধবা ও তালাকপ্রাপ্তা নারীদের বিয়ে করে সমাজে তাদের মর্যাদা বাড়িয়েছিলেন , অন্য অনেক বিধবা ও তালাকপ্রাপ্তা নারীদের জন্য বিয়ের মাধ্যমে নতুন করে বাঁচার ও স্বপ্ন দেখার সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন । একাকী জীবন সংগ্রামে রত নারীদের জন্য বিয়ের মাধ্যমে স্বামীর সাথে দায়িত্ব ভাগ করে নেয়ার মধ্যে লজ্জার কিছু নেই বরং এটি একটি সম্মানজনক উপায় । অর্থনৈতিক দায় – দায়িত্ব স্বামীর উপর ন্যস্ত করার মধ্য দিয়ে আল্লাহ নারীদের জীবন অনেক সহজ করে দিয়েছেন ।

 

ইসলামে তালাকপ্রাপ্তা ও বিধবাদের বিয়ের বিরুদ্ধে কিছু বলা হয় নি বরং এতে যাতে কেউ বাধা না দেয় সেটাই বরং পবিত্র কুরআনে বলা আছে । এটা খুবই অবাক হওয়ার বিষয় যে কিছু মানুষ বহু বিবাহের ব্যপারে রাসূল صلى الله عليه وسلم এর অধিকারকে স্বীকার করে না ।

 

ইসলাম কি বহু বিবাহ চালু করেছে ?

 

অনেকের ধারণা আগে সব পুরুষ শুধু একটি বিয়েই করতো , হজরত صلى الله عليه وسلم প্রথম মানুষ যিনি বহুবিবাহ করেছেন । আসলে আগে বিয়ের কোন নির্দিষ্ট সীমা ছিল না ; সাধারণ পুরুষ থেকে শুরু করে রাজা - বাদশাহ , নবীগণ অসংখ্য বিয়ে করেছেন । এজন্য কেউ তাদের নিন্দা করে নি ।

 

 

এক মুসলিম চিন্তাবিদকে একবার পশ্চিমা এক ইয়াহূদী প্রশ্ন করলো : তোমরা কেমন করে এমন একজনকে শ্রদ্ধা করো যিনি নয়টা ( আসলে হবে ১১ ) বিয়ে করেছিলেন ?

 

মুসলমান চিন্তাবিদ পাল্টা প্রশ্ন করলেন : তুমি কি তাওরাতের নবীদের সম্মান করো ? লোকটি বললো : হ্যাঁ । মুসলিম চিন্তাবিদ এরপর জানতে চাইলেন : তুমি কি হজরত দাউদকে সম্মান করো ? উত্তর আসলো : হ্যাঁ । আবার প্রশ্ন : তুমি কি হজরত সুলায়মানকে সম্মান করো ? আবারো উত্তর : হ্যাঁ । এখন মুসলিমের সহাস্য প্রশ্ন : দাউদের ছিল ১০০ স্ত্রী ; সুলায়মানের ছিল তিনশত স্ত্রী ও সাতশত উপপত্নী । তুমি এদেরকে সম্মান করছো , তাহলে হজরত صلى الله عليه وسلم এর প্রতি তোমার এত অশ্রদ্ধা কেন ? ইয়াহূদী একেবারে লা – জওয়াব হয়ে গেল ।

 

বহু বিবাহ নিয়ে ড. জাকিরের বক্তব্য :

 

 

ড: জাকির নায়েক বলেন , পবিত্র কুরআনই একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যেখানে বলা আছে , বিয়ে করো একজনকে .....পুরো আয়াতটি হলো বিয়ে করবে দুই , তিন অথবা চার ; আর যদি আশংকা করো সুবিচার করতে পারবে না তবে একজনকে ( সুরা নিসা ; আয়াত ৩ ) । আগে বিয়ের কোন সীমা ছিল না , শর্ত ছিল না ; ইসলাম বলে দিল সাধারণ পুরুষেরা একসাথে স্ত্রী রাখতে পারবে সর্বোচ্চ চারজন - সেটাও শর্তসাপেক্ষ - সুবিচার করতে হবে তাদের সাথে । শর্ত পূরণ করতে না পারলে বিয়ে একের বেশী করা যাবে না । ভগবান রামের পিতা রাজা দশরথের একাধিক স্ত্রী ছিল , হিন্দুদের উপাস্য ভগবান শ্রীকৃষ্ঞ ষোল হাজার বিয়ে করেছিলেন ; তাহলে মুসলমানরা কেন চার বিয়ে করতে পারবে না ?

 

 

রাসূল মুহাম্মদ صلى الله عليه وسلم এর জন্য ব্যতিক্রম :

 

 

 

 

চারের বেশ একসাথে স্ত্রী রাখার অধিকার শুধু ছিল রাসূল মুহাম্মদ صلى الله عليه وسلم এর জন্য ( সুরা আহযাব ; ৩৩:৫০) । এটি আল্লাহর দেয়া অধিকার । এ নিয়ে আল্লাহকে চ্যালেজ্ঞ করারা অধিকার তাঁর বান্দাদের নেই ।

 

 

গণমাধ্যমের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না : ইসলাম সম্পর্কে পড়াশোনা করুন , জানুন :

 

মুসলমানদের নিজের ধর্মের পাশাপাশি অন্য ধর্ম সম্পর্কেও জানতে হবে ; যাতে এভাবে পাল্টা প্রশ্ন করে তাদের বিভিন্ন অপপ্রচারের জবাব দেয়া যায় । অথচ মুসলমানরা আজ অন্য ধর্ম সম্পর্কে তো দূরের কথা , ইসলাম ধর্মের যা যা বিষয় সম্পর্কে জানা অপরিহার্য , সেটাও তারা জানে না ।

 

 

 

গণমাধ্যমের অপপ্রচারের জন্য এই মুসলমান নামধারী অনেকেই ভাবে , যে কোন সন্ত্রাসের জন্য ইসলাম দায়ী , পৃথিবীতে সব সন্ত্রাসী মুসলমান , হজরত صلى الله عليه وسلم একের বেশী বিয়ে করে ঠিক করেন নি , আসতাগফিরুল্লাহ । আল্লাহ আমাদের হেদায়েত করুন । আমীন ।

 

 

 

তথ্যসূত্র : ১. .islamweb.net/emainpage/index.php?page=showfatwa&Option=FatwaId&Id=81505

 

২.www.islamonline.net/servlet/Satellite?pagename=Islamonline-English-Ask_Scholar/FatwaE/FatwaE&cid=1119503544668

 

৩. http://www.islamawareness.net/Polygamy/why.html

 

 

 

 

 

 

Link to comment
Share on other sites

Create an account or sign in to comment

You need to be a member in order to leave a comment

Create an account

Sign up for a new account in our community. It's easy!

Register a new account

Sign in

Already have an account? Sign in here.

Sign In Now
×
×
  • Create New...