Jump to content
IslamicTeachings.org

আল্লাহর নবীর বন্দীনী কন্যা


MUSLIM WOMAN

Recommended Posts

Asalamu'alaikum

 

 

 

 

আল্লাহর নবীর বন্দীনী কন্যা

 

ড: আফিয়া ,পাকিস্তানের একজন মুসলিম মহিলা স্নায়ু বিজ্ঞানী ২০০৩ সালের মার্চে করাচি থেকে তিন শিশু সন্তানসহ আচমকা নিখোঁজ হয়ে যান । দীর্ঘ পাঁচ বছর পর তার সন্ধান পাওয়া যায় আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের হাতে বন্দী অবস্থায় ।

 

বিচারের নামে প্রহসন :

 

বন্দী করে দীর্ঘ পাঁচ বছর নির্যাতন করার পরে ড: আফিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন কর্তৃপক্ষ অভিযোগ আনে আল কায়েদার সহযোগী হিসাবে কাজ করা ও জিজ্ঞাসাবাদের সময় মার্কিন সেনাকে গুলি করার চেষ্টা ।

আটক অবস্থায় এই দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে আফিয়ার মা – বোন ও পরিবারের অন্য সদস্যরা তার কোন খোঁজই পান নি । এই দীর্ঘ বছরগুলিতে ড: আফিয়াকে দেয়া হয় নি কোন আইনী সহযোগিতা । মার্কিন হেফাযতে গুরুতর অসুস্থ হলেও তাকে দেয়া হয় নি সুচিকিৎসা ।

 

 

এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ও নিউইয়র্কের আদালত ২০১০ সালে এই মুসলিম নারীকে ৮৬ বছরের কারাদন্ড দেয় । বিচার চলার সময় ও তারও আরো আগে

থেকেই ড: আফিয়াকে অন্য সব বন্দী থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় একেবারে নির্জন প্রকোষ্ঠে রাখা হয় । কমপক্ষে আট বছর তাকে এভাবে নির্জনে বন্দী রেখে তার উপর চালানো হয় নানারকম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন ।

 

 

অভিযোগ প্রমাণের আগেই ড: আফিয়া ও তার শিশু সন্তানদের সাথে

অমানবিক আচরণ করা হয়েছে , যে নিষ্ঠুর পদ্ধতিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে , তা যে কোন দেশের আইন অনুযায়ী অবৈধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘন । মার্কিন হেফাযতে থাকার সময় গুলিতে তিনি আহত হলেও তাকে সুচিকিৎসা দেয়া হয় নি , তার যে ছবি অনলাইনে দেখা যায় এতে স্পষ্ট বোঝা যায় সুচিকিৎসার অভাবে তার এখন মূমূর্ষ দশা ।

 

 

ড: আফিয়ার পরিবার মার্কিনীদের একতরফা ভাষ্য প্রত্যাখ্যান করেন ও পাকিস্তান সামরিক বাহিনী কিভাবে নিজেদের এক নাগরিককে বিশেষ করে শিশু সন্তানসহ মহিলাকে বিদেশীদের হাতে তুলে দিতে পারে , এ নিয়ে বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন ।

 

আফসোস । মার্কিনীরা একটি মুসলিম প্রধান দেশের ভিতর ঢুকে শিশু সন্তানসহ এক মুসলিম নারীকে ইচ্ছামত অপহরণ করে নিয়ে যেতে পারে , তাকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে ধর্ষণ , নির্যাতন করতে পারে ; তার এক সন্তান মায়ের সাথে আছে কিন্ত্ত অন্য দুই

সন্তানদের আজো কোন খবর নেই । হয়তো তাদের মেরে ফেলা হয়েছে বা কোন খ্রিস্টান ধর্মসংস্থায় দিয়ে দেয়া হয়েছে খ্রিস্টান বানানোর জন্য । এসব নিয়ে মুসলিম বিশ্বের কোন প্রতিবাদ চোখে পড়ে না ।

 

কোন মার্কিন খ্রিস্টান নারীকে তা সে যতই অপরাধী হোক না কেন , তার নিজের দেশ থেকে অপহরণ করে তার পরিবার থেকে বছরের পর বছর বিচ্ছিন্ন রেখে , একতরফা অভিযোগ এনে বিদেশে তার বিচার করার ক্ষমতা কি কোন মুসলিম দেশের আছে ? কি দূর্ভাগ্য আমাদের । আমাদের কোন মুসলিম নারী গর্ব করে বলতে পারবে না তার দেশ তাকে এই অধিকার , এই নিরাপত্তা দিয়েছে ।

 

 

 

ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে বলা হয় , একজন ততক্ষণ পর্যন্ত নিরপরাধ যতক্ষণ না সে অপরাধী হিসাবে প্রমাণিত হচ্ছে । ড: আফিয়ার ঘটনা চোখে আঙুল তুলে দেখিয়ে দেয় , পশ্চিমারা মনে করে মুসলমানরা সবাই অপরাধী যতক্ষণ না প্রমাণ হয় তারা নির্দোষ ।

 

 

 

মুসলিম - সেকাল আর একাল :

 

 

৮৩৭ হিজরীতে একজন মুসলিম নারী রোমানদের হাতে বন্দী হয়েছে শুনে তখনকার মুসলিম খলিফা মুতাসিম তার পুরো সেনাবাহিনীকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন সেই মুসলিমাহকে উদ্ধার করার জন্য । আর আজ আমরা পুরো মুসলিম উম্মাহ চুপচাপ দেখি কিভাবে আমাদের এক মুসলিম বোনকে কাফিররা তাদের বন্দীশালায় নগ্ন করে দিনের পর দিন অত্যচার করছে । ধিক আমাদের ।

 

আফিয়া বিচারককে বলেন , আমি সেদিন মরে গিয়েছি যেদিন আমাকে মার্কিনীদের হাতে তুলে দেয়া হয় ; তারা যখন আমাকে ধর্ষণ করে , প্রতিবার আদালতে হাজির করার আগে আমাকে পুরো নগ্ন করে তল্লাসি করে , তখন প্রতিবার আমি মারা যাই ।

 

মার্কিনীদের দেশপ্রেম , নাগরিকের প্রতি দায়িত্ববোধ বনাম মুসলিম দেশের নাগরিকদের মর্যাদা :

 

মার্কিনীদের দেশপ্রেম এত বেশী , নিজ দেশের নাগরিকদের প্রতি তাদের দায়িত্ববোধ এত প্রবল যে , কোন দেশে যদি মার্কিন কেউ কোন অপরাধে অভিযুক্ত হয় , তখনই তারা দেনদরবার করে তাকে সেখান থেকে ছাড়িয়ে আনে । তাদের যুক্তি হলো , যদি আমার দেশের নাগরিক অপরাধ হয় , আমরাই নিজের দেশে তার বিচার করবো । তাই আমরা দেখি বাংলাদেশে মাদক পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত মার্কিন তরুণীকে মুক্ত করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হয় । মার্কিন কোন নাগরিক যদি খুনের মতো জঘন্য অপরাধেও অপরাধী হয়ে থাকে , মার্কিন যু্ক্তরাষ্ট্র লাখ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে হলেও তাকে সে দেশ থেকে মুক্ত করে নিয়ে আসে ।

 

অথচ কোন মুসলিম নারীকে মার্কিনীরা যদি অপরাধী বলে রায় দেয় , তবে বিনা প্রতিবাদে মুসলমানরা তা মেনে নেয় , শত ধিক আমাদের ।

 

 

ঈমানী শক্তিতে বলীয়ান আমাদের এই বোন :

 

আফিয়ার মাকে গত বছর রোজায় তার মেয়ের সাথে ফোনে কথা বলার সুযোগ দেয়া হয় । তখন তিনি মেয়েকে দু:খ করে বলছিলেন , তোমার উপর এই নির্যাতন আমি সহ্য করতে পারছি না ।

 

মাকে সান্ত্বনা দিয়ে আফিয়া বলেন , আমি রোজ রাতে হজরত মুহাম্মদ সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে স্বপ্নে দেখি । তিনি এক রাতে আমাকে বললেন , তোমার মাকে দু:খ করতে মানা করো । আল্লাহ তার জন্য বেহেশতে যে সম্মান রেখেছেন , তা এই দুনিয়ার জীবন থেকে উত্তম ।

 

আরেক স্বপ্নে রাসুল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মা আয়শা রাযি আল্লাহু আনহার কাছে নিয়ে গিয়ে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার সময় বলেন , আয়শা , এ ( আফিয়া ) হলো আমাদের মেয়ে । সুবহানআল্লাহ । এই দুনিয়ায় কোটি কোটি মুসলমান আছে যারা জীবনে এক রাতেও রাসুল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে স্বপ্নে দেখতে পায় নি । আর আমাদের নির্যাতিতা বোন প্রতি রাতেই রাসূল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে স্বপ্নে দেখতে পারছেন । সন্দেহ নেই , এটা আমাদের বোনের প্রতি আল্লাহর অশেষ দয়া । হয়তো রাসূল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রতি রাতে স্বপ্ন দেখার সৌভাগ্য লাভ করেই কাফিরদের এত নির্যাতনের পরেও আমাদের বোন ঈমানী শক্তিতে বলীয়ান । মাকে তাই তিনি ফোনে এভাবে সান্ত্বনা দিতে পারেন ও পরকালের উত্তম জীবনের কথা মনে করিয়ে দেন ।

 

আল্লাহর নবী যাকে নিজ কন্যা বলে সম্মান দিয়েছেন , তার জন্য আমরা মুসলিম উম্মাহ কী করছি ? কাল কিয়ামতের মাঠে যখন আল্লাহ জানতে চাইবেন বা রাসূল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে যখন আমরা শাফায়াতের জন্য সুপারিশ করবো , তখন কিভাবে বলবো তাকে যে কাফিরদের হাতে তার বন্দীনী

কন্যার জন্য আমরা কিছুই করি নি ? না কোন জোরালো প্রতিবাদ , না কোন আন্দোলনের চেষ্টা , না তার জন্য দু’ রাকাত নফল সালাত আদায় করা , না তার জন্য কোন মুক্তিপণ প্রদানের মাধ্যেমে তাকে মু্ক্ত করার কোন চেষ্টা আমরা চালিয়েছি ।

 

মুসলিমরা সিংহ থেকে ইঁদুর হয়েছে বহু আগেই । আজ চোখের সামনে কাফিরদের বন্দীশালায় আমাদের মুসলিম বোনকে ধর্ষিতা হতে দেখেও তাই আমাদের বুকে আগুন জ্বলে উঠে না । কি হতভাগা আমরা । আল্লাহ যেন আমাদের অপরাধ ক্ষমা করেন , আমাদেরকে ঈমানী শক্তিতে বলীয়ান করেন । আসুন , এই ঈদে আমরা আমাদের এই বন্দীনী বোনের মুক্তির জন্য দু ’ রাকাত সালাত আদায় করে তার জন্য দুআ করি । যে মুসলমান নামধারীরা কাফিরদের হাতে নিজেদের মুসলিম বোনকে নিযাতিতা হবে জেনেও তুলে দেয় , আল্লাহ যেন তাদের হেদায়েত করেন । যে কাফিররা মার্কিন ও অন্য কারাগারে আমাদের হাজারো মুসলমান ভাই – বোনকে বছরের পর কারারুদ্ধ রেখে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করছে , আল্লাহ যেন তাদের হেদায়েত অথবা শাস্তি দেন ।

কেউ যদি আমাদের এই বোনকে সান্ত্বনা জানিয়ে দুই লাইন লিখতে চান , তাহলে পোষ্ট কার্ডে লিখুন এই ঠিকানায় :

 

Aafia Siddiqui

90279-054

FMC CARSWELL

FEDERAL MEDICAL CENTER

P.O. BOX 27137

FORT WORTH, TX 76127

USA

 

তার মা - বোনকে সাহস ও সান্ত্বনা দিতে চাইলে ই মেল পাঠান : [email protected]

 

 

“হে আমাদের প্রতিপালক! আমরাতো আপনারই উপর নির্ভর করেছি,আপনারই অভিমুখী হয়েছি এবং প্রত্যাবর্তন তো আপনারই নিকট। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদেরকে কাফিরদের পীড়নের পাত্র করবেন না; হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদেরকে ক্ষমা করুন; আপনি তো পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।” (সূরা আল-মুমতাহিনাহ; ৬০ :৪-৫)

 

 

বিস্তারিত জানতে এসব সাইটে যান :

 

 

http://www.justiceforaafia.org/multimedia/719-fowzia-siddiqui-heart-rending-exposition-about-dr-aafia-siddiqui

Link to comment
Share on other sites

Create an account or sign in to comment

You need to be a member in order to leave a comment

Create an account

Sign up for a new account in our community. It's easy!

Register a new account

Sign in

Already have an account? Sign in here.

Sign In Now
×
×
  • Create New...