MUSLIM WOMAN 46601 Report post Posted August 1, 2012 সততার শিক্ষা রমজানের উপহার মুহাম্মদ তৈয়্যেব হোসাইন মাহে রমজানের সিয়াম সাধনা মানুষকে আত্মিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতি লাভের এক সুবর্ণ সুযোগ এনে দেয়। রোজাদার বান্দা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ক্ষুধা-তৃষ্ণার কষ্ট সহ্য করে। সংযমের দীর্ঘ প্রশিক্ষণে নিজেকে সমর্পণ করে। এ ক্ষেত্রে ফাঁকির কোনো আশ্রয় নেয়ার অবকাশ থাকে না। আল্লাহর কাছে এবং নিজের কাছে তাকে অপরিহার্যভাবে সত্ থাকতেই হয়। বান্দার অন্তর্গত সততা রমজানের অনন্য উপহার। এ সততা অবলম্বন করে সে নৈতিকতার উচ্চ আসনে আরোহণ করতে পারে। আর এভাবেই স্রষ্টা ও পালনকর্তা আল্লাহ তায়ালার অনন্ত অসীম রহমতের দ্বার উন্মুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে মানুষ যথার্থই বেহেশতি সওগাত লাভের উপযুক্ত হয়ে ওঠে। ইমাম গাজ্জালী (রহ.) রোজার তিনটি স্তরের কথা বর্ণনা করেছেন : এক. আল্লাহ তায়ালার প্রেমে বিভোর থেকে সুবহে সাদিক হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার, কামাচার এবং তাবত্ পাপকাজ থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত হওয়াই হলো প্রকৃত রোজা। দুই. পানাহার, কামাচার এবং যাবতীয় পাপকাজ পরিহার করা। তিন. শুধু পানাহার ও কামাচার থেকে বিরত থাকা। মূলত এটি হচ্ছে রোজার সর্বনিম্ন স্তর। আল্লাহ তায়ালা হাদিসে কুদসিতে রোজা সম্পর্কে ঘোষণা করেছেন : ‘রোজা আমারই জন্য আর আমিই এর প্রতিদান দেব।’ অন্য বর্ণনায় বলা হয়েছে : ‘আমি নিজেই এর প্রতিদান হয়ে যাব।’ অর্থাত্ আমার সন্তুষ্টি লাভই হবে এর সত্যিকার প্রতিদান, যা রোজাদার লাভ করবে। রোজাকে বিশেষভাবে আল্লাহ তায়ালার সঙ্গে সম্পর্কিত করার কারণ এই যে, অন্যান্য ইবাদতে লোক দেখানোর সম্ভাবনা থাকে, কিন্তু রোজায় এ সম্ভাবনা নেই; রোজা শুধু আল্লাহ তায়ালার জন্য হয়। এ ক্ষেত্রে অবশ্য বান্দার সততা জরুরি। সততা না থাকলে বান্দা নিজ ঘরে বসে পানাহার ও কামাচার সেরে নিয়েও রোজার দাবি করে বসতে পারে। রোজা সম্পূর্ণ সততার ওপর নির্ভরশীল। তাই তো অন্যান্য ইবাদতের সওয়াব নির্ধারিত থাকলেও রোজার প্রতিদান সরাসরি আল্লাহ দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এক হাদিসে বলা হয়েছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করেছেন : হে আল্লাহর রাসুল! রোজা কীভাবে বিনষ্ট হয়? জবাবে তিনি বলেন : মিথ্যা এবং পরনিন্দা দ্বারা রোজার ঢাল বিনষ্ট হয়। অর্থাত্ রোজার মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়। সুতরাং রোজার হেফাজত করতে হলে সততা অবলম্বন করতে হবে; মিথ্যাকে করতে হবে পরিহার। এক হাদিসে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন : ‘যে ব্যক্তি রোজা রেখেও মিথ্যা কথা ও অন্যান্য পাপাচার থেকে বিরত থাকে না, তার পানাহার পরিত্যাগে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই। এমনি রোজা দ্বারা ফরজ দায়িত্ব চুকে গেলেও রোজার সত্যিকার সওয়াব লাভের আশা করা মুশকিল। অপর এক হাদিসে বলা হয়েছে : ‘রোজা হলো মানুষের জন্য ঢালস্বরূপ।’ অন্যায়-অসুন্দর কাজ থেকে আত্মরক্ষার জন্য, দোজখের শাস্তি থেকে মুক্তি লাভের জন্য রোজা হলো ঢালস্বরূপ। যেভাবে মানুষে ঢাল দ্বারা আত্মরক্ষা করে থাকে, তেমনিভাবে রোজা দ্বারা শয়তানের আক্রমণ থেকেও আত্মরক্ষা করা যায়। তবে এ জন্য প্রয়োজন সততার। একজন মুসলিমকে জীবনের সব ক্ষেত্রে সততার পথে এগুতে হবে, রোজা আমাদের সে শিক্ষাই দিয়ে যায়। * আরও জানতে দেখুন বিশেষ আয়োজন ‘রমজান প্রতিদিন’ http://www.amardeshonline.com/pages/details/2012/08/01/157184 Share this post Link to post Share on other sites