Jump to content
IslamicTeachings.org

আমি মানুষকে তার মাতা - পিতার সাথে ভাল ব্যবহার করতে আদেশ দিয়েছি


MUSLIM WOMAN

Recommended Posts

assalam.gif

 

 

 

চীন দেশের এক মেয়ে লিলি কিভাবে তার শাশুড়িকে বিষ খাওয়াতে চেয়েছিল ও পরে কী হলো , তা আমাদের সবার জানা দরকার । আশা করি , যে বউ - শাশুড়িরা দিন -রাত ঝগড়া করাকে নিজেদের অধিকার বলে মনে করেন , তারা আল্লাহর দয়ায় হয়তো হেদায়তেপ্রাপ্ত হবেন ।

 

লিলি বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে এসে একদমই নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছিল না । স্বামীকে তার ভাল লেগেছিল কিন্ত্ত সমস্যা হলো শাশুড়ি । এমন বদমেজাজী মহিলা দুনিয়ায় আর আছে কি না সন্দেহ । সবসময় লিলির দোষ খুঁজে বেড়ানো , আত্মীয়স্বজন - প্রতিবেশীদের কাছে লিলির আর তার বাপের বাড়ির বদনাম শাশুড়ির প্রিয় কাজ ছিল ।

 

 

 

লিলিও কম যেত না । শাশুড়ির প্রতিটি কথার প্রতিবাদ সে নিজে তো করতোই , স্বামীকেও পাঠাতো মায়ের সাথে ঝগড়া করার জন্য । স্বামী বেচারা মা না বউ - কাকে বোঝাবে , কার মন রাখবে - এই সমস্যায় অসুস্থ হয়ে পড়লো ।

 

 

 

লিলি মন ঠিক করলো - না , এভাবে চলতে পারে না । মা ভক্ত ছেলে বউকে নিয়ে আলাদা হবে না । তাই একটাই উপায় - শাশুড়িকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলা ।

 

 

 

লিলির বাবার বন্ধু ছিলেন চিকিৎসক । তিনি ভেষজ উদ্ভিদ দিয়ে ঔষধ বানিয়ে রোগীদের সুস্থ করে তুলতেন । লিলি তার কাছে গিয়ে আবদার করলো ঔষধ নয় , বরং বিষাক্ত ভেষজ দিয়ে তাকে বিষ বানিয়ে দিতে যা সে শাশুড়িকে খাওয়াবে । প্রথমে বাবার বন্ধু রাজী হলেন না ; কিন্ত্ত লিলির দু:খের কথা শুনে আর তার বারবার অনুরোধে তিনি বাধ্য হয়ে রাজী হলেন । লিলিকে বিষের শিশি দিয়ে বললেন , এটা শাশুড়িকে একবারে খাওয়াবে না , তাহলে উনি সাথেসাথে মারা যাবেন আর পুলিশ তোমাকে ধরে নিয়ে যাবে ।

 

 

 

তুমি রোজ আলাদাভাবে শাশুড়ির পছন্দমতো কোন খাবার বানিয়ে অল্প অল্প করে বিষ মেশাবে ; তাহলে দিনের পর দিন বিষ শরীরে জমা হয়ে কিছুদিন পর উনি মারা যাবেন । আর এই সময়ের মধ্যে তুমি একদম তার সাথে ঝগড়া করবে না , বরং তার মন রেখে চলবে । তাহলে শাশুড়ি মারা গেলে কেউ তোমাকে কোন সন্দেহ করবে না । সবাই ভাববে বয়স হওয়ায় তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে ।

 

 

 

বাবার বন্ধুকে অনেক ধন্যবাদ দিয়ে লিলি খুশী মনে বাসায় ফিরলো । অন্যদিন শাশুড়ি যদি জানতে চাইতো , কোথায় গিয়েছিলে - তাহলে লিলি মুখ ঝামটা দিয়ে জবাব দিতো । আজকে আর শাশুড়ির কথায় রাগ করলো না । শান্তভাবে বললো , এই তো মা , একটু দরকারে বের হয়েছিলাম । আপনি বিশ্রাম নিন , আমি রান্না করে দিচ্ছি ।

 

 

 

শাশুড়ি খুবই অবাক হলেন । বিয়ের পর এই প্রথম লিলি হাসিমুখে তার সাথে কথা বলছে , নিজে থেকে রান্না করতে চাইছে - তার একদমই বিশ্বাস হচ্চিলো না লিলির আচরণ । হয়তো বউমার সুমতি হয়েছে - এটাই ভাবলেন শাশুড়ি । বউ যে তাকে বিষ দিয়ে মারতে চাইছে , এটা তিনি ভাবতেও পারেন নি।

 

 

 

লিলি বাবার বন্ধুর উপদেশ মতো রোজ আলাদা করে শাশুড়ির জন্য খাবার রান্না করে তাতে বিষ মেশাতে লাগলো । শাশুড়ি কখনো কিছু বললে আর ও ঝগড়া করতো না বা স্বামীর কাছে নালিশ করতো না । কেউ যেন পরে তাকে শাশুড়ির মৃত্যুর জন্য সন্দেহ না করতে পারে , সেজন্য লিলি নিজেকে একদম বদলে ফেললো । নিজের মায়ের মতো করে শাশুড়িকে সম্মান আর ভালবাসাতে শুরু করলো ।

 

 

 

স্বামী আর শাশুড়ি ভেবেই পেল না কেমন করে লিলি এত বদলে গেল । তবে সুখের সীমা থাকলো না তাদের । স্বামীর অসুখ সেরে গেল , শাশুড়ি মহাখুশীতে সবাইকে বলতে লাগলো লিলির মতো এমন বউ পাওয়া ভাগ্যের ব্যপার । নিজের মেয়ে থাকলে তাকে যেমন ভালবাসতেন , ঠিক তেমনি করে লিলিকে তিনি ভালবাসতে শুরু করলেন । সবসময় লিলির দোষ খুঁজে বেড়ানো , লিলির আর তার বাপের বাড়ির বদনাম করা - এসব আর করতেন না । সারা বাসার পরিবেশই একদম বদলে গেল । পুরো পাড়াতে খবর ছড়িয়ে পড়লো লিলির মতো বউ আর হয় না । সবাই লিলির শাশুড়ির সৌভাগ্যে হিংসা করতে লাগলো ।

 

 

 

অভিনয় করতে করতে কিভাবে লিলি একদিন আসলেই বদলে গেল , তা সে নিজেও বুঝতে পারলো না। যে শাশুড়িকে সে আগে সহ্যই করতে পারতো না , আজকাল আর তাকে খারাপ লাগে না , বরং লিলির প্রশংসা সবার কাছে করার জন্য শাশুড়িকে ভাল লাগতে শুরু করলো ।

 

মাথার উপর একজন মুরুব্বী আছেন যিনি যে কোন বিপদ আসলে তাদেরকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসবেন , শাশুড়ি যে তার শত্রু না বরং তাদের ভাল চান যেমনটি তার নিজের মা চান , তাদের ভালোর জন্য স্রষ্টার কাছে শাশুড়ি সবসময় দুআ করেন এটা লিলি এখন বুঝতে পারলো । কিন্ত্ত সর্বনাশ যা হওয়ার তাতো হয়েই গিয়েছে , লিলির দেয়া বিষ যে শাশুড়ির দেহে জমা হয়েছে , তার থেকে মুক্তির উপায় কী ?

 

লিলি ছুটে গেল বাবার বন্ধুর কাছে । অনুনয় করে বললো , চাচা , আমার ভুল হয়ে গিয়েছে । আমার শাশুড়ি আর আগের মতো খারাপ নেই , উনি অনেক বদলে গিয়েছেন , আমাকে নিজের মেয়ের মতোই ভালবাসেন । আমি চাই না উনি মারা যাক । আমাকে ভাল কোন ঔষধ দিন যা শাশুড়িকে খাওয়াবো যাতে বিষের ক্ষতি না হয় ।

 

বাবার বন্ধু হেসে বললেন , মা , তুমি ভয় পেও না । আমি তোমাকে কখনোই বিষ দেই নি । আমি এক ধরণের ভিটামিন ঔষধ দিয়েছিলাম যা তুমি শাশুড়ির খাবারে মেশাতে , এতে উনার স্বাস্থ্য আরো ভাল হয়েছে। আসল সমস্যা ছিল তোমার মনে , তোমার আচরণে । আমি চেয়েছিলাম তোমার মনের বিষ দূর করতে । তুমি নিজের খারাপ আচরণ বদলে ফেলায় শাশুড়িও তোমাকে ভালবাসতে শুরু করলেন । তুমি শাশুড়িকে শত্রু ভেবে তার সাথে বেয়াদবি করতে । আমার কথায় তুমি ভাল ব্যবহার শুরু করায় দেখলে তো শাশুড়িও তোমাকে কত ভালবাসলেন ?

 

 

 

লিলি বাবার বন্ধুকে অনেক ধন্যবাদ দিয়ে বাড়ি ফিরে গেল ।

 

আমি মানুষকে তার মাতা - পিতার সাথে ভাল ব্যবহার করতে আদেশ দিয়েছি । তার মা তাকে গর্ভে ধারণ করে কষ্টের সাথে ও প্রসব করে কষ্টের সাথে ; তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়াতে লাগে ত্রিশ মাস ( পবিত্র কুরআন ; সুরা আহকাফ ; ৪৬:১৫ )

 

 

 

 

Link to comment
Share on other sites

Create an account or sign in to comment

You need to be a member in order to leave a comment

Create an account

Sign up for a new account in our community. It's easy!

Register a new account

Sign in

Already have an account? Sign in here.

Sign In Now
×
×
  • Create New...