Jump to content
IslamicTeachings.org

অমুসলমানদের যেখানেই পাও হত্যা করো ?


MUSLIM WOMAN

Recommended Posts

Asalamu'alaikum

 

 

 

 

পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে , “ আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন যথার্থ কারণ ছাড়া তোমরা তাকে হত্যা করবে না ( সুরা আনআম ; ৬ :১৫‌১ ) ।

 

কুরআনের নীতি অনুসারে যথাযথ কারণ ছাড়া কোন নিরপরাধ মানুষকে খুন করা মানে যেন পুরো মানবজাতিকে মেরে ফেলা । আল্লাহ বলেন : বনী ইসরাঈলের প্রতি এই বিধান দিলাম যে , নরহত্যা বা দুনিয়ায় ধ্বংসাত্নক কাজ করা ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন দুনিয়ার সব মানুষকেই হত্যা করলো , আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে সে যেন সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করলো ( সুরা মায়িদা ; ৫ :৩২) ।

 

আল্লাহ মানুষকে বারবার সাবধান করে বলেছেন : আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন , যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করবে না ( সুরা বনী ইসরাইল ; ১৭:৩৩ ) ।

 

 

 

তাহলে মনে প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক , কেন তবে এই কুরআনেই বলা হয়েছে : .. যেখানে তাদেরকে পাবে হত্যা করবে ? অনেকের অভিযোগ , অমুসলিমদের হত্যা করার জন্য কুরআন মুসলমানদেরকে বিনা শর্তে অনুমতি ও উৎসাহ দিয়েছে । ইসলামের বিরুদ্ধে এটি আরেকটি অপপ্রচার ।

 

এই অভিযোগ ও ভুল ধারণার উত্তর হলো , এই আয়াতগুলি পড়ার সময় এর পটভূমি বা ইতিহাস জানতে হবে । সবচেয়ে ভাল হয় যদি পটভূমি জানার পাশাপাশি এই আয়াতের আগের ও পরের কিছু আয়াতও পড়ে নিন ।

 

 

 

 

সুরা বাকারা :

‌২.‌১৯০ - যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তোমরাও আল্লাহর পথে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো ; কিন্ত্ত সীমা লংঘন করো না । নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালংঘনকারীদের ভালবাসেন না ।

 

 

২.১৯১ - যেখানে তাদেরকে পাবে হত্যা করবে এবং যে জায়গা থেকে তারা তোমাদেরকে বের করে দিয়েছে , তোমরাও সেই জায়গা থেকে তাদেরকে বের করবে । হত্যা থেকে ফিতনা গুরুতর । মসজিদুল হারামের কাছে তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করবে না যে পর্যন্ত তারা সেখানে তোমাদের সাথে যুদ্ধ না করে । যদি তারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তবে তাদেরকে হত্যা করবে , এটাই কাফিরদের পরিণাম ।

 

 

২.১৯২ - যদি তারা বিরত হয় , তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল , পরম দয়ালু ।

 

২.১৯৩ - আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবে যতক্ষণ না ফিতনা দূর হয় ও আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠিত হয় । যদি তারা বিরত হয় তবে যালিমদের ছাড়া আর কাউকে আক্রমণ করা চলবে না ।

 

২.১৯৪ – পবিত্র মাস পবিত্র মাসের বিনিময়ে । যার পবিত্রতা অলঙ্ঘনীয় তার অবমাননা সবার জন্য সমান । তাই যে কেউ তোমাদেরকে আক্রমণ করবে , তোমরাও তাকে একইভাবে আক্রমণ করবে ও তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং জেনে রাখো যে , আল্লাহ অবশ্যই মুত্তাকীদের সাথে থাকেন ( সুরা বাকারা ; ২:১৯০-১৯৪) ।

 

সুরা নিসা :

 

 

৪:৮৯ - তারা এটাই চায় যে তারা যেমন কুফরী করেছে তোমরাও তেমন কুফরী করো ; যাতে তোমরা তাদের সমান হয়ে যাও । তাই আল্লাহর পথে হিজরত না করা পর্যন্ত তাদের মধ্য থেকে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে না । যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে তাদেরকে যেখানে পাবে গ্রেফতার করবে ও হত্যা করবে এবং তাদের মধ্য থেকে কাউকেও বন্ধু ও সহায়করূপে গ্রহণ করবে না ।

 

৪:৯০ - কিন্ত্ত তাদেরকে নয় যারা এমন এক সম্প্রদায়ের সাথে মিলিত হয় যাদের সাথে তোমরা অংগীকারবদ্ধ অথবা যারা তোমাদের কাছে এমন অবস্থায় আসে যখন তাদের মন তোমাদের সাথে অথবা তাদের সম্প্রদায়ের সাথে যুদ্ধ করতে সংকুচিত হয় । আল্লাহ যদি ইচ্ছা করতেন তবে তাদেরকে তোমাদের উপর ক্ষমতা দিতেন ও তারা নিশ্চয়ই তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতো । তাই তারা যদি তোমাদের সাথে যুদ্ধ না করে ও শান্তি প্রস্তাব করে , তবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা অবলম্বনের পথ রাখেন না ।

 

৪:৯১ - তোমরা কিছু লোককে পাবে যারা তোমাদের সাথে ও তাদের সম্প্রদায়ের সাথে শান্তি চাইবে । যখনই তাদেরকে ফিতনার দিকে ডাকা হয় ,তখনই এই বিষয়ে তারা তাদের আগের অবস্থায় ফিরে যায় । যদি তারা তোমাদের কাছ থেকে চলে না যায় , তোমাদের কাছে শান্তি প্রস্তাব না করে ও তাদের হাত সংবরণ না করে , তবে তাদেরকে যেখানেই পাবে গ্রেফতার করবে ও হত্যা করবে এবং তোমাদেরকে তাদের বিরুদ্ধাচরণের স্পষ্ট অধিকার দিয়েছি ।

 

 

এখন সত্যি করে বলুন তো , এসব আয়াত কি অমুসলিমদের হত্যা করার ঢালাও অনুমতি দিচ্ছে ?

 

 

এসব আয়াত কখন নাজিল হয়েছিল ?

 

 

এসব আয়াত নাজিল হয়েছিল যখন মুসলমানরা মক্কার অমুসলমানদের দ্বারা নিয়মিতভাবে আক্রমণের শিকার হচ্ছিলো । মদীনার মুসলমানদেরকে মূর্তি উপাসকরা ভীত – সন্ত্রস্ত করে তুলেছিল । বর্তমান সময়ের আলোকে বলা যায় , মুসলমানরা নিয়মিতভাবে সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছিলো ; সেজন্য মুসলমানদেরকে অনুমতি দেয়া হয় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার । এই আয়াতগুলি সন্ত্রাস করতে বলা হয় নি বরং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সতর্কবাণী । এই সতর্কবাণীর মধ্যেও লক্ষ্য করে দেখুন মুসলমানদেরকে কতটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা হয়েছে .... কিন্ত্ত সীমা লংঘন করো না (‌২.‌১৯০) ।

 

 

ড: জাকির বলেন জিহাদ অনেক ধরণের হয় । এক ধরণের জিহাদ হলো যুদ্ধের ময়দানে অত্যাচারী ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে লড়াই করা । হিন্দুদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ গীতা ও মহাভারতে যুদ্ধের অনেক বর্ণনা আছে । আপন পরিবারের মধ্যে যুদ্ধ , রক্ত সম্পর্কিত আত্মীয়রা একের বিরুদ্ধে অন্যে যুদ্ধ করছে , এমন কাহিনী ওখানে আছে । যদি কোন হিন্দুকে প্রশ্ন করেন , তাহলে কি তোমাদের ধর্ম বলে আপন আত্মীয়কে খুন করতে , তখন তারা বলবে না , না , ওটা ছিল ধর্মযুদ্ধ । অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই । পবিত্র কুরআনও ঠিক একই কথা বলে , অন্যায়ের বিরুদ্ধে জিহাদ করো ।

 

 

ইসলামের অনেক সমালোচক যেমন ভারতের অরুণ সুরী তার বইতে সুরা তওবার ৫ নং আয়াতের কথা বিকৃতভাবে লিখেছে : লড়াই করো ও মুশরিক / কাফির ( হিন্দুদের ) হত্যা করো যেখানেই পাবে । অথচ পবিত্র কুরআনে হিন্দু কথাটা নেই । অরুণ সুরী তার বইতে আরো যা উল্লেখ করেন নি তাহলো , সুরা তওবার শুরুতে মুসলমান ও মুশরিকদের মধ্য চুক্তির কথা বলা হয়েছে । মক্কার মুশরিকরা এই চুক্তি ভঙ্গ করলে আল্লাহ তাদেরকে চার মাস সময় দেন সঠিক পথে আসার জন্য , নয়তো তাদেরকে যুদ্ধের মুখোমুখি হতে হবে বলে সাবধান করে দেয়া হয় ।

 

এই আয়াত শান্তির সময় ঘরে - বাজারে –খেলার মাঠে অবস্থানরত নিরস্ত্র , নিরীহ বেসামরিক অমুসলিমদের জন্য প্রযোজ্য নয় : নিষিদ্ধ মাস পার হলে মুশরিকদের যেখানে পাবে হত্যা করবে , বন্দী করবে , অবরোধ করবে ও প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের জন্য ওঁৎ পেতে থাকবে ( ৯:৫ ) ।

 

 

 

 

অরুণ সুরী এরপর সুরা তওবার ৬ নং আয়াতটি তার বইতে উল্লেখ করেন নি । যে কোন যুক্তিবাদী মানুষই বুঝতে পারবেন যে ঐ আয়াতেই রয়েছে এই অপপ্রচারের উত্তর ।

 

 

মুশরিকদের মধ্যে কেউ তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করলে তুমি তাকে আশ্রয় দিবে যাতে সে আল্লাহর বাণী শুনতে পায় ; তারপর তাকে তার নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দিবে , কারণ তারা অজ্ঞ ( সুরা তওবা ; ৯:৬ ) ।

 

 

 

ড. জাকির বলেন , যুদ্ধের সময় কোন সেনাপতি বড়জোর সৈন্যদের এটা বলতে পারে যে বন্দীকে মেরো না , ছেড়ে দাও । কোন ধর্মগ্রন্থে যুদ্ধরত সৈন্যদের এই আদেশ দেয়া হয়েছে যে শত্রুদের নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দাও ? একমাত্র কুরআনেই পাবেন এমন মহৎ নির্দেশ । ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় মার্কিন সৈন্যদের প্রতি নির্দেশ ছিল ভিয়েতনামী যোদ্ধাদের দেখলেই খুন করতে হবে । এর মানে কি এই যে এখন যে কোন আমেরিকান যেখানেই ভিয়েতমানী কাউকে দেখবে , তাকেই মেরে ফেলবে ?

 

 

 

 

 

দেখুন , ইয়াহুদী ও খ্রিস্টানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থে যুদ্ধ ও হত্যার কত বিবরণ রয়েছে ।

 

“তোমরা যে দেশ অধিকার করবার জন্য যাচ্ছ সেখানে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুই তোমাদের নিয়ে যাবেন ...... তিনি যখন তাদের তোমাদের হাতের মুঠোয় এনে দেবেন এবং তোমরা তাদের হারিয়ে দেবে তখন তোমরা তাদের একেবারে ধ্বংস করে ফেলবে। তোমরা তাদের সংগে কোন সন্ধি করবে না এবং তাদের প্রতি কোন দয়া দেখাবে না। দ্বিঃবিঃ ৭:১-২)

 

(দ্বিঃবিঃ 20:10) “তোমরা কোন গ্রাম বা শহর আক্রমণ করতে যাওয়ার আগে সেখানকার লোকদের কাছে বিনা যুদ্ধে অধীনতা মেনে নেবার প্রস্তাব করবে।

(দ্বিঃবিঃ 20:11) যদি তাতে তারা রাজী হয়ে তাদের ফটক খুলে দেয় তবে সেখানকার সমস্ত লোকেরা তোমাদের অধীন হবে এবং তোমাদের জন্য কাজ করতে বাধ্য থাকবে।

(দ্বিঃবিঃ 20:12) কিন্তু তারা যদি সেই প্রস্তাবে রাজী না হয়ে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামে তবে সেই জায়গা তোমরা আক্রমণ করবে।

(দ্বিঃবিঃ 20:13) তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যখন সেই জায়গাটা তোমাদের হাতে তুলে দেবেন তখন সেখানকার সব পুরুষ লোকদের তোমরা মেরে ফেলবে।

(দ্বিঃবিঃ 20:14) তবে স্ত্রীলোক, ছেলেমেয়ে, পশুপাল এবং সেই জায়গার অন্য সব কিছু তোমরা লুটের জিনিস হিসাবে নিজেদের জন্য নিতে পারবে। শত্রুদের দেশ থেকে লুট করা যে সব জিনিস তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের দেবেন তা তোমরা ভোগ করতে পারবে।

(দ্বিঃবিঃ 20:15) যে সব শহর তোমাদের দেশ থেকে দূরে আছে, যেগুলো তোমাদের কাছের জাতিগুলোর শহর নয়, সেগুলোর প্রতি তোমরা এই রকম করবে।

(দ্বিঃবিঃ 20:16) কিন্তু তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু সমপত্তি হিসাবে যে সব জাতিদের গ্রাম ও শহর তোমাদের দিতে যাচ্ছেন সেখানকার কাউকেই তোমরা বাঁচিয়ে রাখবে না।

(দ্বিঃবিঃ 20:17) তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে তোমরা হিত্তীয়, ইমোরীয়, কনানীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় এবং যিবূষীয়দের সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে ফেলবে।

 

 

 

(গণনা 31:17) এখন তোমরা এই সব ছেলেদের এবং যারা কুমারী নয় এমন সব স্ত্রীলোকদের মেরে ফেল;

(গণনা 31:18) কিন্তু যারা কুমারী তাদের তোমরা নিজেদের জন্য বাঁচিয়ে রাখ।

(লূক 19:27) আমার শত্রুরা যারা চায় নি আমি রাজা হই, তাদের এখানে নিয়ে এস এবং আমার সামনে মেরে ফেল।’ ”

 

গণমাধ্যম শুধু প্রচার করে কুরআনে যুদ্ধের আয়াত আছে । অথচ অন্য ধর্মগ্রন্থগুলিতেও দেখবেন যুদ্ধ ও হত্যার অনুমতি দেয়া হয়েছে তবে গণমাধ্যমে সেসবের বিরুদ্ধে কোন নিন্দা বা সমালোচনা আপনার চোখে পড়বে না কেননা গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করছে যিয়নিস্টরা ( উগ্র ইয়াহুদীবাদী ও তাদের সমর্থকরা যারা ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী ) ।

 

আমরা যেন ইসলাম বিরোধী এদের কোন অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হই , আমীন ।

 

সহায়ক সূত্র : ড: জাকির নায়েক , http://www.islamawareness.net/Hinduism/ ... part9.html , ড: মুজাম্মেল সিদ্দিক , সভাপতি , ফিকাহ কাউন্সিল , উত্তর আমেরিকা , ইসলাম অনলাইন ,http://www.christbd.org/component/option,com_joombible/Itemid,385/layout,biblia/view,biblia

Link to comment
Share on other sites

Create an account or sign in to comment

You need to be a member in order to leave a comment

Create an account

Sign up for a new account in our community. It's easy!

Register a new account

Sign in

Already have an account? Sign in here.

Sign In Now
×
×
  • Create New...